
(চৌরাশি ক্রোশ ব্রজমণ্ডল পরিক্রমা)
সকাল ৯:০৫, ট্রেন ঢুকল দীন দয়াল উপাধ্যায় বা অধুনা মোঘলসরাইতে। রাইট টাইম। এখানে আমাদের সাথে যোগ দিল ভাইজাগ থেকে আসা দম্পতি অর্ক ও সুবর্না।সারদিন ট্রেনে হইহুল্লোর করেই কেটে গেল।বিকাল সাড়ে ৫ টায় ট্রেন কানপুর ঢুকল, তিন ঘন্টা লেট। কানপুরে আরো প্রায় ১ ঘন্টা লেট করল গাড়ী।এদিকে হরিওমজী ফোন করে আমায় জানিয়ে দিলেন রাত্রে আগ্রা ক্যান্টঃ স্টেশনে আমাদের নিয়ে বৃন্দাবন যাবার জন্য একটি বাস উনি পাঠিয়ে দেবেন। এদিকে বিরক্তি, উদ্বেগ, বিলম্বিতা সব নিয়ে আমাদের ট্রেন যখন আগ্রা ক্যান্ট এ ঢুকল তখন রাত দেড়টা।হরিওমজীর পাঠানো বাসে চেপে আমরা ২৭ জন রওনা দিলাম বৃন্দাবনে র দিকে। আগ্রাতে আমাদের সাথে যোগদিল ডাক্তারবাবুর ফ্যামিলি। গোটা বাসে নাম করতে করতে রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ এসে পৌছলাম বৃন্দাবনে। গোপীনাথ বাজারে হরিওমজীর আশ্রম গিরিরাজ বাঙ্গালী আশ্রমে এসে উঠলাম।দোতলার ঘরে সবেমাত্র ঢুকেছি এমন সময় হরিওমজী র ফোন। রাত প্রায় ৪টে বাজে। হরিওমজীর কথা মত আমরা সবাই ঘুম ঘুম চোখে হাজির হলাম গোবিন্দজী মন্দিরে। দেখা হল মঙ্গলারতি। ঘরে ফিরে স্নান সেরে জলখাবার পেটে পুরে বেড়িয়ে পরলাম।
প্রথমেই গেলাম গোপীশ্বর মহাদেব।
উনি বৃন্দাবনের দ্বারী। একে একে লালাবাবুর মন্দির, রঙ্গোজী মন্দির দেখে ঘরে ফেরা। দুপুরে প্রসাদ পেলাম আশ্রমেই। ভাত,ডাল, ফুলকপির তরকারি, চাটনি দিয়ে উদর পূর্তি করে টানা ঘুম। বিকালে ঘুম ভাঙ্গল হরিওমজীর ডাকে।জানিয়ে দিলেন কাল সকাল থেকে ৮৪ ক্রোশ পরিক্রমা শুরু হবে।
আজ কোজাগরী পূর্ণিমা। গোটা বৃন্দাবনে আজ ঠাকুরদের গর্ভগৃহ থেকে বাইরে এনে রাখা হয়। বিকালে বেড়িয়ে আমরা গেলাম রাধা গোপীনাথ, রাধারমন, নিধুবন, মীরাবাঈ মন্দির, রাধাদামোদর মন্দির, সোয়ামন শালগ্রামশিলা দেখে ঘরে ফিরলাম।মন ভরে গেল রাধারমণ এর সন্ধ্যা আরতি দেখে।কাল সকালে যাত্রা শুরু। চৌরাশি ক্রোশ ব্রজ মন্ডল পরিক্রমা। হিসাবে ২৫২ কিলোমিটার। গাড়ী তে সময় লাগে ৫ দিন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের লীলাভূমি এই ৮৪ ক্রোশ জুড়ে। এর মধ্যে পড়বে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান ও হরিয়ানা। শুয়ে পড়লাম রাত প্রায় ১২টায়। কাল ভোর ৪ টেয় ওঠা। নিয়মসেবার দামোদর মাস। শুকশারী দিয়ে যুগলকে জাগাতে হবে তো………………
( চলবে)